১২ সপ্তাহের প্রিমিয়াম মেন্টরশীপ রিভিউ
মেন্টর - Sajedur Rahman
পূর্বের ওজন: ৯৫ কেজি
বতর্মান ওজন: ৮৩.৭ কেজি
কমেছে প্রায়: ১১.৩ কেজি
হাইট: ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি
ছোটকাল থেকে সবসময় আমাকে সবাই রোগা বলতো। ইউনিভার্সিটি লাইফেও আমার ওয়েট ৬০ কেজির মতো ছিল। কিন্তু ২০১০ সালে চাকরীজীবনে প্রবেশের সাথে সাথে ওজন হু হু করে বাড়া শুরু করে এবং ২০১৩ সালের মধ্যে তা ৯৫ এ গিয়ে পৌঁছে। সিডেন্টারি লাইফস্টাইল এর পিছনের প্ৰধান কারণ। এরপর কখনো আমার ওজন ৯০ এর নিচে নামেনি। তবে এই বিষয়টা নিয়ে আমি তেমন চিন্তিত ছিলাম না।তবে গত বছর সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি সবচেয়ে বাজে পর্যায়ে মোড় নেয়। আমার ওজন তিন অঙ্কের কাঁটা ছুঁয়ে ফেলে অর্থাৎ ১০০। আমার হাঁটু ব্যথা শুরু হয়। তাও আমি পাত্তা দেইনি। নামাজ পড়তে গেলে বা ঝুঁকে কোন কাজ করতে বিশাল কষ্ট হত। অবশেষে গত অক্টোবরে আমার এক ডায়েটিশিয়ান ফ্রেন্ডের পরামর্শে ব্লাডের কিছু টেস্ট করাই এবং তাতেই আমার টনক নড়ে। আমার রক্তে এল ডি এল আর ইউরিক এসিডের মাত্রা অনেক বেশি ধরা পড়ে। আমি ছাত্রজীবনে বেশ খেলাধুলা করতাম এবং বেশ ফিটও ছিলাম। নিজের অবহেলার কারণে শরীরের এই অবস্থা হওয়ার পিছনে নিজের উপরই রাগ হতে লাগলো। তো ঐ ফ্রেন্ডের পরামর্শ অনুযায়ী জিমে ভর্তি হই আর ওর দেয়া ডায়েট ফলো করা শুরু করি। কিন্তু প্রায় ৩ মাস চেষ্টার পর ওজন খালি ৫ কেজি কমে। এতে আবার হতাশ হয়ে পড়ি। অবশেষে আমার ওয়াইফ -এর পরামর্শে লুস টু গেইন পেইজে নক দেই এবং সেখান থেকে আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়।
সাজেদুর ভাই-এর সাথে যোগাযোগ করার পর উনি জানতে চান আমি কি ওয়েট দ্রুত কমাতে চাই না সাস্টেইনাবল কোন পদ্ধতি বেছে নিতে চাই যেটা কিনা বেশি কার্যকরী। তো কি মনে করে আমি দ্বিতীয় অপশনটাই সিলেক্ট করলাম। আমার থেকে আমার খাদ্যাভ্যাস আর সব ডিটেইলস নেয়ার পর উনি আমাকে ডায়েট ও এক্সারসাইজ রুটিন দিলেন। আমি খুবই অবাক হলাম উনি তেমন কিছুই খেতে নিষেধ করেননি। শুধু খাবার পরিমানমত মেপে খাওয়া, ৯০০০ স্টেপ প্রতিদিন হাঁটা আর কিছু আপার মিড্ এন্ড লোয়ার বডি এক্সারসাইজ এ ছিল আমাকে দেয়া প্ল্যান এর প্রধান অংশ। আস্তে আস্তে প্লানটা ফলো করা শুরু করলাম। ডায়েট ফলো করা তেমন কঠিন ছিল না কারণ আমি পছন্দের প্রায় সব কিছুই খেতে পারতাম শুধু একটু কম পরিমানে। শুধু দাওয়াত বা বন্ধুদের সাথে কোনো রেস্তোরায় বসলে আর হুশ থাকতো না। যা খুশি খেয়ে নিতাম। ধরাটা খেতাম ভাইয়া যখন জিজ্ঞেস করতো ডায়েট এর কি অবস্থা। তখন লজ্জায় পরে যেতাম। উনি তেমন কিছুই বলতো না খালি বলতো বেশি অনিয়ম করলে প্রোগ্রেস ভালো হবে না। এই প্রোগ্রামের সবচেয়ে বেস্ট পার্টটাই হচ্ছে এই ফলোআপ সেকশন। রেগুলার প্রোগ্রেস আপডেট দিতে হতো বলে নিজের অনিয়মগুলোর জন্য অনুশোচনা হতো আর মনে হতো আমাকে আরো সিরিয়াস হতে হবে। ৬-৭ সপ্তাহ লেগেছে ব্যাপারটার সাথে তাল মিলাতে। এখন যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটা শিখেছি সেটা হচ্ছে না বলা। কি বিয়ে কি পার্টি আমি পরিমিত খাই এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলো এভোয়েড করি। খাবারের ক্ষেত্রে আমি মেইন যেটা পরিবর্তন এনেছি সেটা হচ্ছে আমি চিনি ও ভাজা পোড়া না পাড়তে একদমই খাই না। প্রতিদিন অন্তত ৯০০০-১০০০০ স্টেপ মেইনটেইন করি আর সপ্তাহে ৪-৫ দিন অন্তত কিছু এক্সারসাইজ করার চেষ্টা করি। যদি আমি পিছনে ফিরে তাকাই তাহলে যেটার আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা মনে করি এই প্রোগ্রামের সেটা হচ্ছে লাইফস্টাইল পরিবর্তন। হেলদি লাইফস্টাইল মেইনটেন্যান্স অনেক কিছুই সহজ করে দেয় আর নিজের মধ্যে একটা সচেতেনতা গড়ে তোলে।
সাজেদুর ভাইয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার মধ্যে এই লাইফস্টাইল বিষয়ক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য। ইন্শাল্লাহ আমি চেষ্টা করবো বাকি জীবন এই শিক্ষাটা ধরে রাখার।