১২ সপ্তাহের প্রিমিয়াম মেন্টরশীপ রিভিউ
মেন্টর – সাজেদুর রহমান
পূর্বের ওজন: ৯১.৫কেজি
বতর্মান ওজন: ৭৯.১৫কেজি
কমেছে প্রায়: ১২.৩৫কেজি
হাইট: ৫’৬.৫”
বয়সঃ ৩৫
প্রায় বছর দশেক আগে থেকে আমার ওজন বাড়া শুরু হয় এবং একটা সময় ৯০ এর আশেপাশেই থাকা শুরু করে। আস্তে আস্তে হাই-প্রেশার, প্রি-ডায়বেটিক এসব রোগ শুরু হয় এবং মেডিকেশন ও শুরু করতে হয়। এর মাঝে অনেকবার অনিয়মিত ভাবে বিভিন্ন ডায়েট (কার্ব্ললেস, আই এফ) ফলো করা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক ফল ও পাওয়া গেছে কিন্তু বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এর মূল একটা কারণ ছিল সবসময় মনে হতো আমি ওজন কমানোর জন্য খুব এক্সট্রা কিছু করছি যেমন কার্ব না খাওয়া, একবেলা খাবার স্কিপ করা – যেগুলো লং-টার্ম মেইন্টেইন করা খুব একটা সহজ না এবং বাসার অন্যদের সাথে খাপ খাওয়ানোতেও সমস্যা হত। এছাড়া আগের ডায়েট গুলো তে শারীরিক দুর্বলতা অনুভব হতো।
এরপর আসলে আমি সাজেদ ভাইয়ের শরণাপন্ন হই। সব কিছু শোনার (মেডিক্যাল কন্ডিশন, টেস্টি খাবারের প্রতি দুর্বলতা) পর উনি আমাকে মিথ্যা কোন প্রলোভন না দেখিয়ে একটা কথা সরাসরি বলেন যে- ওজন কমাতে হলে কিছু ক্ষেত্রে টেস্ট কে সেক্রিফাইস করতেই হবে এবং ডায়েটকে রেগুলার লাইফস্টাইলের মধ্যে আনতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় ব্যাপারটা আমার কাছে আসলে অনেকটা অসম্ভবই লেগেছিলো। প্রতিদিন মেপে মেপে ভাত-তরকারি খাওয়া, হিসেব করে তেল ব্যবহার, আরও নানা বিধিনিষেধ। আগে থেকেই আমি চা-এ এক্সট্রা চিনি বা সফট ড্রিঙ্কস খাই না, তাই এগুলা মানতে সমস্যা হয়নি কোন। কিন্তু এত “অল্প পরিমাণ” খাবার খেয়ে সাথে এক্সারসাইজ করে কতদিন চলতে পারবো তা নিয়ে খুব সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু এখন আসলে ব্যাপারটা একেবারেই অন্যরকম। এর থেকে বেশি এখন আর খেতেও পারি না। তেমন ক্ষুধাও লাগে না সত্যি বলতে।
আমার শুরু থেকেই ১৪২০ ক্যালরি ডায়েট ছিল। সাথে ছিল ১ ঘন্টা এক্সারসাইজ। সত্যি বলতে আমি যে খুব ভালোভাবে এগুলা মেইন্টেইন করেছি তা না। প্রচুর দাওয়াত খাওয়া হয়েছে, বাসায় কোন রিচ ফুড খাওয়ার ক্রেভিং উঠলেই খাওয়া হয়েছে। বাইরে রেস্টুরেন্টেও খাওয়া হয়েছে মাঝে মাঝেই। প্রথম প্রথম ভয়ে ভয়ে সাজিদ ভাইকে জিজ্ঞেস করতাম যে দাওয়াত আছে। উনি কখনো না করেন নাই, জাস্ট আমাকে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দিয়েছিলেন যে রাতে দাওয়াত থাকলে দুপুরের খাবারটা স্কিপ করতে পারেন। এরপর আসলে আর সমস্যা হয়নাই এগুলো মেইন্টেইন করতে। যেহেতু ডেইলি সকালে ওজন দেখার একটা অভ্যাস হয়ে গেছে, খুব সহজেই এখন খাবার স্কিপ/ব্যাল্যান্স করে ওজন ঠিক রাখতে পারি।
ছয় সপ্তাহের মাথায় কয়েকদিনের জন্য জ্বর হলে, এক্সারসাইজ অনিয়মিত হয়ে যায়। বলতে গেলে শেষের ছয় সপ্তাহ এক্সারসাইজ প্রায় করাই হয়নি। তারপরও ওজন একই রেশিওতে কমেছে। সেটার কারণ হলো ক্ষুধা কমে যাওয়ায় আমি খুব সহজেই ব্রেকফাস্ট, ফলমূল ও স্নাক্স স্কিপ করতে পারতাম। মাঝে মাঝে দেখা গেছে ১০০০ ক্যালরি ইনটেক হয়েছে কিন্তু শারীরিক কোন দুর্বলতা অনুভব হয়নি। হয়তো এটা স্বাস্থ্যকর না কিন্তু চেষ্টা করেছি ওজন কমার রেশিও টা যেন ঠিক রাখতে পারি। আরেকটা বড় কারণ ছিল রেগুলার সাজেদ ভাই আপডেট নিতেন। দুয়েকবার যখন হয়েছে যে ইনপ্রুভমেন্ট হয় নাই তখন নিজের কাছেই কেমন লজ্জা লাগতো। যদিও সাজেদ ভাই খুবই সাপোর্টিভ তারপরও পরের উইকে যেন এমন সিচুয়েশন না হয় সে চিন্তায় আসলে কোন না কোন ভাবে ঠিকই ওজন কমানো হয়ে গেছে।
এখন আমার নেক্সট টার্গেট হলো ৭০ এর কাছে যাওয়া এবং ডায়েট এর পাশাপাশি এক্সারসাইজটাকেও লাইফস্টাইলের সাথে পোক্তভাবে যুক্ত করা।
সাজেদ ভাইকে আর লুজ টু গেইনকে আসলে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না। আশা করি আমার মত আরও অসংখ্য মানুষ আপনাদের হাত ধরে সুস্থ লাইফস্টাইলে আসবে।